ফার্মার রা এর পুত্র ফিনিক্স রা অথবা একজন প্রতিষ্ঠানবিরোধী লেখক এবং অন্ধকারের মাঝিমাল্লা - ঋষি এস্তেবান

ঋষি এস্তেবান

সক্রিয় ছোটকাগজের লেখক...

সর্বশেষ লেখা

আপনি জীবদ্দশায় অপ্রাতিষ্ঠানিক থাকতে পারেন, কিন্তু প্রতিষ্ঠান নামের বুনোশুয়োর আপনাকে থাকতে দেবেনা কারণ, তাদের ‘ঘি’ বলেন আর ‘গু’ বলেন কোন কিছুতে ‘না’ নেই

বুধবার, ১৪ মার্চ, ২০১৮

ফার্মার রা এর পুত্র ফিনিক্স রা অথবা একজন প্রতিষ্ঠানবিরোধী লেখক এবং অন্ধকারের মাঝিমাল্লা

টানা গুলির শব্দ তাকে ঘুম থেকে টেনে তোলে, সাথে সাথেই হুড়মুড় ভেঙ্গে পড়ে ঘরের দরজা-জানালা-দেয়াল!

মুহূর্তে কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রবল আতঙ্ক তাকে উড়িয়ে নিয়ে চলে ঝোঁপঝাড়  তোলপাড় করে। সে ছুটতে থাকে সব সামর্থ উজাড় করে ফসলি জমির উপর দিয়ে তারপর একটা জোছনা ভরা ফাকা লম্বা মাঠ পার হয়ে যায়! কতক্ষণ কোন দিকে ছোটে তা তার হিসাব থাকে না এবং কোন দিকে তার নিস্তার তার কিছুই না জেনেই সে ছুটতে থাকে, হঠাৎতার সামনের পথ বন্ধকরে দাড়ায় এক উচুঁ দেয়াল যার উপরে লোহার এ্যাঙ্গেলে প্যাঁচানো কাঁটাতারের জাল! কয়েক মুহূর্ত সে থমকে থাকে,পেছন থেকে ক্রমাগত কাছিয়ে আসছে কয়েক জোড়া ভারি বুটের ধুপধাপ আর ঘোৎঘোৎ ধ্বণি,যা তার ¯ৃ§তিনির্ভর বুদ্ধি ব্যবস্থাপনা স্থবির করে দেয়আর স্বভাব তার সার্বিক নিয়ন্ত্রণ গ্রহন করে,সাথে সাথেই স্বভাবের নির্দেশে তার শরীর লাফিয়ে উঠে আঁকড়ে ধরে দেয়ালের প্রান্ত আর বেয়ে উঠে হেঁচড়ে পেচড়ে পার হয়ে যায় উপরের কাঁটাতারের জাল। তার হাতের তালু সহ আঙ্গুলের কয়েক জায়গায় তারকাঁটা ফুটো করে দেয় আর বুকের বা পাশের এক টুকরো মাংস ছিড়ে রাখে। ভজ করে গিলে ফেলার কোলাহল ওঠে আর সে তলিয়ে যায় ভয়াল বিশাক্ত দুর্গন্ধভরা আঠার ভিতরে...

দ্রূত হাত পা ছুড়ে সে নিজেকে ভাসিয়ে তোলে, মুখ ভরে যাওয়া তীব্র ঝাঁঝের  আঠালো দুর্গন্ধথু থু করে বের করার চেষ্টা করতেই তার অণুভব হয় জিভটা অসম্ভব পুরু আর ভারী। সে ডান হাতের তিন আঙ্গুল মুখে পুরে জিভের উপর থেকে কেখে তুলে আনে আর একটা জিভ যা তার হাতের ভিতরে পাক খেয়ে আঙ্গুলে পেঁচিয়ে যায়! আতঙ্কের প্রবল চাপে তার স্বভাবের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, সে কাঁপতে কাঁপতে আবিষ্কার করে তার হাতের মধ্যে পাক খেয়ে  পেঁচিয়ে যাচ্ছে একটা বড় জোঁক।
তীব্র অন্ধকার দৃশ্যথেকে মুছে ফেলেছে সব কিছু।হঠাৎ তার শরীর স্বভাবের একটা নির্দেশ পায় আর হাত পা নড়েচড়ে  উদ্যোগী হয়ে ধীরে ধীরে নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে কিন্তু কোথায়? কোন দিক সামনে বা পিছন তা সে বুঝতে পারে না, মুলতঃ সে হিসাবও তার থাকে না। হঠাৎ তার বুদ্ধিবৃত্তিক পদ্ধতি চালু হয়ে যায়! তার ধারনা হয় ‘এই অন্তহীন পচা দুর্গন্ধের সরবরের কোন প্রান্ত নেই, নিশ্চই আমার মৃত্যু হয়েছে আর আমাকে তাড়িয়ে এনে উপনিত করা হয়েছে নরকে। এখান থেকে বের হবার কোনো পথ নেই । অচিরেই আমি পঁচে গলে বিবর্তিত হব থক থকে দুর্গন্ধে কিন্তু আমার মৃত্যু হবে না। সমস্ত জ্বালা যন্ত্রণা সব সময় থাকবে সো"চার কারণ নরকে কোনো জন্ম মৃত্যু নেই এরকম বলা আছে পবিত্র পুঁথিতে।’

সে এক ধ্যানে হাত পা চালিয়েনিজেকে টেনে নিয়ে সামনে এগোয় কতো সময় তা তার হিসেব থাকে না। হঠাৎ সে দেখে  সামনে দুরে চাঁদের রহস্যময় আলোয় একবার দৃশ্যমান হচ্ছে পর মুহূর্তে মুছে যাচ্ছে অস্পষ্ট তীররেখা। এই দৃশ্য তার ভিতরে ফিরিয়ে আনে কিছুটা আশা আর প্রত্যয় যা প্রেরণা আর শক্তিতে পরিণত হয়ে তার গতি বাড়িয়ে দেয়! হঠাৎ তার পা ছোঁয় মাটি মুহূর্তে সে অনুভব করে পায়ের তলায় মাটির গুরুত্ব! মাটির ছোঁয়া তার উদ্ধার পাবার আস্থা আর গতি আরও বাড়িয়ে দেয়। এক পর্যায়ে সে নিজেকে টেনে তীরে ওঠায়। 
কিছু সময় সে মাটিতে শুয়ে জোরো জোরে শ্বাস টানে। ধীরে ধীরে যন্ত্রনার সুর ও সুত্র সমুহ সক্রিয় হয়ে ওঠে তার মাঝে একই সাথে চালু হয়ে যায় তার স্মৃতি ব্যবস্থাপনা আর বুকের ক্ষতে যন্ত্রণা।
বুকের ক্ষতে হাত দিয়ে সে চমকে ওঠে, মুহর্তে প্রবল আতঙ্ক তাকে অস্থির করে তোলে, সে বুঝতে পারে তার বুকের ক্ষতে লেগে আছে বিশালাকৃতির কয়েকটা জোঁক! সে দ্রুত খামচে টেনে ক্ষতের জোঁকগুলো তুলে ফেলে তারপর সারা শরীর খুঁজে পায় অসংখ্য জোঁক কুচকি-হাত-বোগল-পীট-পেট-পা থেকে এককটা করে জোঁক সে টেনে তুলে ছুড়ে ফেলে। শরীর তন্ন তন্ন খুঁজে যখন বুঝতে পারে আর কোনো জোঁক লেগে নেই তখন তার বুকে আটকে থাকা উৎকন্ঠার নিঃশ্বাসটা অর্ধেক বের হবার আগেই চারপাশে জলে ওঠে কয়েকটা তীব্র সার্চলাইট আর ধ্বনিীত হয় একটি জোরালো ঠান্ডা নির্দেশ ‘নড়বি না, নড়লেই গুলি খাবি।’

চারপাশ থেকে ঝাপিয়ে পড়া তীব্র খোজারু আলোয় সে উদ্ভাসিত, রক্তাক্ত -উলঙ্গ-পঁচা বিশাক্ত কাদায় মাখামাখি।  সে নিজেকে ছাড়া কাউকে দেখতে পায় না।’
অন্ধকারের আর একটি নির্দেশ ধ্বনীত হয় ‘ওঠ, দাঁড়া।’
 সে উঠে দাড়ায়। পেছন থেকে ভারি কিছু তার পীঠে আঘাত করে। সে মুখ থুবড়ে পড়ে শক্ত মাটির উপর। এক ভারিবুট তার মাথা পিশতে শুরু করে। সে গুঙ্গিয়ে বলে’ আমাকে মারছেন কেন আপনারা।’
তার মাথা পিশতে থাকা বুট সরে যায় আর অন্ধকার বলে ‘ওঠ, উঠে দাঁড়া, ক’ আর কিডা কিডা আছে তোর সাথে? কোলি ছাড়ে দিবানে।’
‘আপনারা কি বলছেন, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না’
‘বুঝতিছো না? খানকির পুত বুঝোচ্ছি তোরে’
‘আপনাদের ভুল হচ্ছে’
‘এই তুই ফার্মার রা এর পুত্র ফিনিক্স রা, ঠিক কিনা?’
‘জী’
‘তুই বই লিখিস, ঠিক কি না?’
‘জ্বী, আমি লিখি’
‘কি লিখিস তুই? জনগণ, শোষন,পুঁজি, স¤্রাজ্যবাদ, মুনাফা, শ্রমদাসত্ব, উদবৃত্তমূল্য, পণ্য, শ্রেনি শোষন, শৃঙ্খল মুক্তি, শ্রেণিযুদ্ধ এইসব? এইসব কি?’
‘লেখকের চিন্তা, লেখা বাস্তব বিষয় থেকেই আসে। আমাদের সমাজে, পৃথিবীতে যা ঘটছে আমি সে সব বিষয় নিয়েই লিখি। লেখকের স্বাধীনতা আছে সে রকম পাঠকেরও আছে স্বধীনতা। কারও ভালো লাগলে পড়বে না লাগলে পড়বে না। লেখকের দায়িত্ব সত্য প্রকাশ করা।’
‘তুমি বড় নেতা হইছো,সত্যবাদি যুধীষ্টির। সত্য প্রকাশের দায়িত্ব তোরে কিডা দিছে? তুমি সমাজের শৃঙ্খলার মাঝে বিশৃঙ্খলার ঘন্টা বাজাচ্ছো। নিয়মের মাঝে ঢুকাচ্ছো অনিমের মুগুর? এ দেশে আর কবি সাহিত্যিক নেই? তারা লেখে না? প্রেম বিরহের কাহিনী, ভুতের গল্প, সুন্দর সুন্দর গল্প, কৌতুক, গাছ পাখি নদী, মহাপুরুষের জীবনি, এ্যাডভেঞ্চার,ভ্রমন, ইতিহাসের কাহিনী, রূপকথা এই সব যা পড়ে মানুষেরা ক্লান্তি ভুলে হাসবে, সমাজে শান্তি বজায় থাকবে, এই সবই তো লেখা উচিত। এসব বিষয় রেখে তুই কি লিখিস?’

দক্ষিণ পাশ থেকে আর একটি কন্ঠ বলে ‘শোন ফিনিক্স রা আমি তোমাকে সব বুঝিয়ে বলছি। আমি এই অন্ধকারের অধিনায়কের ভুমিকায় আছি আপাতত। আমি সারা জীবন গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আর গণতন্ত্রের মূল কথা হচ্ছে নিজের সম্পর্কে জানার অধিকার তবে অধিকারের পিছনে কয়েক ধাপ শর্তের সিঁড়ি আছে যার ধাপ গুলো যথাযথ নিয়মে পার হয়ে এসে সে অধিকার অর্জন করতে হয়। যাক সে সব আর এক প্র সঙ্গ। আমি খুব দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস কোরি তোমার নিজের সম্পর্কে জানার অধিকার তোমার আছে। যদি বলি তো বলতে হয় ব্যক্তিগত ভাবে সাহিত্যের প্রতি আমার আগ্রহ আছে। সাহিত্য মানে ঐ গল্প-টল্প  উপন্যাস-টুপন্যাস অবসরে আমি পড়ি এবং এনজয় কোরি। তোমার যাবতিয় প্রকাশিত লেখা আমি পড়েছি মানে পড়তে হয়েছে। ভালোই তো তোমার শব্দ ব্যবহার, বাক্য গঠন, ভাষার স্থাপত্য,বলার স্টাইলে নতুনত্ব আছে, আছে গতি ও মুন্সিয়ানার পরিচয়। তোমার লেখা পড়ে বোঝা জায় তুমি জানো অনেক। তবে ঐ যে কথায় বলে না জানতে জানতে তুমি নিজেকে একেবারে জানোয়ারে পরিনত কোরেছো নিজেকে। তোমার লেখার বিসয় সত্য কিন্তু সত্য কখোনও গল্প হয় না। গল্প লেখকের কল্পনা থেকে তৈরি হয়। তোমার গল্পে আমোদ নাই, নেই ফুর্তি,মজা নেই, হাস্য রস নেই, মানব জীবনের মহত এবং অনিবার্য বিষয় নারী পুরুষের প্রেম নেই।জানি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রত্যেক মানুষকে আলাদা আলাদা ভাগ্য দিয়ে দুনিয়ায় হিজরত করতে পাঠিয়েছেন। যে মানুষ সুখে শান্তিতে সম্মান সম্পদ নিয়ে আছে আর যে মানুষ অভাব অনটনে আছে সবই যার যার ভাগ্যের কারণে হয়েছে,হচ্ছে,হবে। এ ব্যাপারে মানুষের কোনো হাত নেই।সাহিত্যিকের কাজ এমন সাহিত্য রচনা করা যা পড়ে মানুষেরা তাদের দুঃখ কষ্ট এক পাশে সরিয়ে রেখে একটু হাসতে পারে, আনন্দ পায়, একটু বিনোদন পায়। সাহিত্যিকের কাজ হচ্ছে সমাজের রাষ্ট্রের সব সিদ্ধান্ত সব কাজকে মানুষদের কাছে সহনীয় বৈধ করার লক্ষে প্রচার চালানো। তোমার লেখার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে পঁচা ঘামের গন্ধ,আষ্টে অসহনীয় বস্তির দুর্গন্ধ-যন্ত্রনার কাতরানি-বুকফাটা কান্না-আর্তনাদ- শোকের নিশ্বাস-ঘেন্না- ধিক্কার-ভয়াল শব্দ কোলাহল-বহু মানুষের দানবীয় চিৎকার-হুড়োহুড়ি- সব কিছু ভেঙ্গে পড়ার বিকট হুড়মুড় ! এসব কি সাহিত্য? তুমি সি-িকেটের বাইরে চলে গেছো, দলছুট একা হয়ে গেছো। এই বিপদজনক একাকীত্ব তুমি নিজে অর্জন করেছো। তোমার সামনে বহূ বিকল্প ছিলো। তোমার একা জীবন যাপনের বাসনা থাকলে তুমি একা একা পাগোলের বেশ ধরতে পারতে তাহলে সমাজের সবাই  তোমার খাওয়া পরার দায়িত্ব নিতো,সবাই তোমার দেখভাল করতো তাদের পরকালের শান্তির লোভে, চাই কি তোমারএকদল ভক্ত তৈরি হতো,তুমি তাদের কাছে তাবিজ কবজ বিক্রি করে তোমার চলার হিল্লে করতে পারতে। তা না করে তুমি শত্রুপক্ষ বিরুদ্ধবাদি বানিয়েছো ব্যাবস্থাপনার। তুমি ধ্বংসের বার্তাবাহক, প্রতক্ষ্য উসকানি দাতা।সাহিত্যের নামে তুমি যখম করে চলেছো সমাজ, রাষ্ট্র, বিশ্বাস, ঐতিহ্য,ব্যাকরণ! তোমাকে এসব কোরতে দেয়া যাবে না কিন্তু তুমি কোনো ভাবেই আমার উপর বৈরিভাব চাপাতে পারবে না আর আমিও তোমার উপর কোনো বৈরিভাব পোশন কোরি না! আমি দোষ গুনের উর্দ্ধে, আমি পেশাদার আর সবার পেশা সৃষ্ট্রিকর্তা নির্ধিারন করেছেন, আমি বা তুমি কেউ না। আমি একটা নির্দেশ। কতৃপক্ষের ইচ্ছাও বলতে পারো আমাকে। স্টাইল তৈরি হয় সাত সাগর একাশি নদীর ওপারে সুরক্ষিত দূর্গে। ওখানে আছেন বিশেষজ্ঞ ঘাগু ফ্যাশন ডিজাইনার গণ। তিনারা তৈরি করছে সমাজের নৈতিকও অর্থনৈতিক সহ জীবনাচরনের যাবতিয় ডিজাইন। এ সব ডিজাইন হাজার হাজার ফ্যাশন হাজার হাজার বিশেষজ্ঞরা কথার পর কথা অলংকারিক বাক্যে যুক্তির পর যুক্তি দিয়ে সাজিয়ে আকর্ষনিয় করে হাজার হাজার মিডিয়া বিভিন্ন ভার্সনের মাধ্যম আর ভাষায় গেলানো হয় মানুষদের। এদের সাথে থাকে সুকন্ঠি গায়ক বাদক নাচনেআলীর দল সেই সাথে কবিয়াল- সাহিত্যিক-সিনেমা- নাটকওয়ালা-দৈনিক বাজারি সংবাদ পত্র- পত্রিকা আর আর মিডিয়া, শুশীল, এনজিও, ইশকুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সামাজিক ক্লাব সব কণ্ঠ, সব জায়গা থেকে ঐ ফ্যাশনের মহিমা কীর্তন করা হয় আর এই সব আয়োজন,প্রতিষ্টান কে পাহারা দিয়ে রাখে ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্রধারী প্রশিক্ষিত নির্মম সৈনিকের দল। শত শহশ্র গোয়েন্দা, ¯œাইপার, গুপ্ত খুনির দল আর আছে কোর্ট আইন জেলখানা সংসদ! সাত সাগরের ওপারে যদি ফ্যাশন পাল্টায় এখানেও তার ঢেউ এসে লাগে। সময়ের সাথে সাথে এই পাল্টে যাওয়াটাকে আধুনিকতা বলে,বুঝেছো? এই আধুনিকতা যারা বুঝতে পারে না বা বুঝতে চায় নাতারা পিছনে পড়ে থাকে। তোর মতো একজন মামুলি লেখক যার ভাত নেই,জমি নেই,টাকা নেই, বন্দুক নেই, বাহিনী নেই, নেই কোনো আন্তর্জাতিক যোগাযোগ, ভালো কোনো জামা জুতো, ডিগ্রী, খ্যাতি কিছু নেই আর তুই কিনা লড়ার প্রতিজ্ঞা করেছিস এই মহা ব্যবস্থার সাথে? বলতে বাধ্য হচ্ছি তোর সাহস আছে। শোন মুর্খ্য তুই পারবি না, এই ব্যবস্থাপনার বিপক্ষে যাতে জনগণ ক্ষেপে না ওঠে তার জন্য ডিজাইনাররা  ডিজাইনের মাঝেই একটা বিরোধিতা কারি অপসন রেখেছে তার অধীনে আছে কয়েকটা সি-িকেট এমেনেস্টি সি-িকেট, মানবাধিকার সি-িকেট আরও আরও আছে  সুসজ্জিত সব বিরোধীতাকারী সি-িকেট। এরা জনগণের উপর সংগঠিত সব ধরনের জুলুম অত্যাচারের বিরোধীতা করবে গান গেয়ে-মানব বন্ধন করে-টক শো-গোলটেবিল বৈঠক-সেমিনর-সাংবাদিক সম্মেলন-স্মারকলিপি প্রদান সহ এই জাতীয় সবকিছু করে। এই বিরোধীতার ভিতর দিয়ে একটা দ্বন্দ্ব তৈরি করে আর এই দ্বন্দ্ব থেকে তৈরি হয় গতি যে গতিতে এগিয়ে চলে পুরা ডিজাইন আর জনগণ এমেনেস্টি-মানবাধীকারের বর্ণিল ছাতার তলে দাঁড়িয়ে খুন হয় লুট হয় গুম হয় এই আর কি। দেখিস নাই ইরাক-হাইতি-লিবিয়া আফগান সহ আরও আরও বহু দেশে  নির্বিচারে মানুষ খুন হচ্ছে, লুট হচ্ছে পুরা দেশের সম্পদ। এশিয়ায় বহুদেশে বিনা বিচারে খুন হচ্ছে মানুষ। এমেনেস্টি, মানবাধীকার সি-িকেট মিন মিন করে বিরোধিতা করছে, করবে আর এই সব কিছুকে বৈধতা দেয়ার জন্য মুল ডিজাইনাররা তৈরি করে রেখেছে জাতিসংঘ! তুই পারবি এদের সাথে? পারবি না। তুই জেনে গেছিস অন্ধকারের সুর সুত্র ব্যাকরণ ও তার প্রয়োগ পদ্ধতি আর তা ধীরে ধীরে তোর লেখার ভিতর দিয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছিস মানুষের মাথায় কিন্তু মুল ডিজাইনাররা চায় না যা গোপন তা প্রকাশিত হোক। কাজেই তোকে তোর কাজ বন্ধ কোরতেই হবে। জানি তুই তা কোরবি না। সকল নির্দেশ নির্দেশনা প্রলোভন ভয় অনুনয় উপেক্ষিত তোর গোয়ার্তুমির সামনে। তোর সামনে সুযোগের সোনার দরজা খুলে আহ্বান করা হয়েছিলো আয় আয় প্রচলিত পথে আয়। তোকে বেস্ট সেলর বানিয়ে দেয়া হবে, বিজ্ঞাপনের তুফান বইয়ে দেয়া হবে  তোকে ব্রা-িং করার জন্য, তোকে মেডেল দেয়া হবে, সোনার তৈরি বহুমূল্য রত্ন বসানো পদক দেয়া হবে আর খেতাব দেয়া হবে মহা সম্মানজনক, টাকা গাড়ি বাড়ি আরাম আয়েশের জীবন হবে তোর। দেশ বিদেশে ভ্রমনে যাবি সম্মান আর সম্পদে ভরে দেয়া হবে তোর জীবন কিন্তু না সব তুই প্রত্যাক্ষান করেছিস চরম একগুয়ে অর্থহীন জিদে! এখন তোর অবসান । তোকে পাল্টে ফেলা হবে এটাও মুল ডিজাইনের অংশ। তোকে মেরে ফেলা হবে। মৃত তোর জন্য মিছিল হবে সরব এবং মৌন। বিপুল আয়োজনের শোক সভা হবে। বড় বড় কলাম লেখা হবে তোর মহত্ব তুলে ধরে, টকশো হবে তোর আপস না করার মহত্ব প্রচার করা হবে মহাসমারহে, প্রচার প্রপগান্ডা চলতেই থাকবে, তোকে কিংবদন্তির মহানায়কে পরিনত করা হবে।তারপর তোর লেখা গুলো ছাপিয়ে লক্ষ লক্ষ কপি বিক্রি করা হবে। তোর পোস্টার  ছেপে বিক্রি করা হবে। দেখিস না চেগুয়েভারা, লেনিন, মাওসেতুং,ঋতিকঘটক, লালনের ছবি বিক্রি হচ্ছে! কারা বিক্রি করছে তাদের? হ্যা এরা তারাই যাদের বিরুদ্ধে তারা সারা জীবন লড়াই করে ছিলো। তোকেও ঐ পর্যায়ে তুলে আনা হবে, বিক্রয়যোগ্য করে তোলা হবে । তোকে আর তোর সব কাজকে পণ্য বানানো হবে। ব্যাস, আমি তোমার সম্পর্কে তোমাকে সব কিছু জানালাম নিজের বিবেকের জায়গা পরিস্কার রাখার তাগিদ থেকে। যদিও তোমাকে এসব জানাবার কোনো বাধ্যবাধকতা আমার নাই তবুও জানালাম কারণ আমি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তোমার নিজের সম্পর্কে অবশ্যই তোমার জানার অধিকার আছে আর সামর্থ থাকতে আমি তোমার সে অধিকার উপেক্ষা করতে পারি না। তো ফার্মাার রা এর পুত্র ফিনিক্স রা দেখলে তো তোমার প্রতি আমার  কোনো ব্যক্তিগত বিদ্বেস নাই,আমি আমার মিত্রভাব বজায় রাখতে পেরে খুশি। তোমার জন্য অনেক শুভ কামনা,বিদায়। সার্জেন্ট ওকে সাবাড় করে দাও,জাস্ট কিল হিম।’

-ঋষি এস্তেবান


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যে মানুষটা তার দেশ খুঁজে পায়নি

তিনরাত তিনদিন টানা বৃষ্টি-বাতাসের ঘূর্ণি সারা এলাকা তোলপাড় করে ছুটে বেড়ায়।  এই বৃষ্টি বাতাস ঝনঝা উপদ্রুত সময়ের মাঝে কোথা থেকে ঠিক কখন স্...

Pages